সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হোটেলে তখন সাত থেকে আটজন মানুষ দুপুরের খাবার খাচ্ছেন। তাবে তাদের প্লেটগুলোতে খেয়াল করে দেখা যায় একজন ছাড়া বাকিদের পাতে কোনো মাছ কিংবা মাংসের তরকারি নেই। শাক,সবজি, ভর্তা এবং পাতলা ডাল দিয়েই তারা দুপুরের খাবার খেয়ে নিচ্ছেন।
হোটেলে কর্মরত স্টাফদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক মাস থেকেই এমন পরিস্থিতি চলছে। অধিকাংশরাই এখন আর মাছ-মাংস খাচ্ছে না। দুপুরের খাবারে তাই আগের মতো জমজমাট বেচা বিক্রি হয় না।
কথা হয় একাধিক ক্রেতার সঙ্গে। তারা জানান, সব জিনিসের দাম বাড়লেও তাদের মজুরি বাড়েনি। ফলে এখন পরিবার পরিজন নিয়ে চলতেই কষ্ট হয়। আগে দুপুরে এক টুকরা মাছ কিংবা মাংস দিয়ে খেলেও এখন আর সেই উপায় নেই।
আগে ভাত ছিল ১০ টাকা তা এখন ১৫ টাকা, আগে ডিম ছিল ১৫ টাকা তা এখন বিক্রি হয় ২৫ টাকায়। এছাড়া মাছ কিংবা মাংস দিয়ে খেতে চাইলে দেড়শ টাকার বেশি খরচ হয়। সাড়ে চারশ থেকে ৫শ টাকা মজুরিতে কাজ করে এক দেড়শ টাকা দিয়ে দুপুরে খবার খেলে বাড়ির জন্য বাজার করার আর উপায় থাকে না।
হোটেল ম্যানেজার মো. হারুন মৃধা বলেন, আগে যে চালের বস্তা কিনতাম ২২০০ টাকায় তা এখন কিনতে হয় ২৮০০ টাকায়। আগে যে পাঙ্গাস মাছ ১২০ টাকা কেজিতে কেনা যেত তা এখন ১৮০ টাকায় কিনতে হয়।
আগে যে ব্রয়লার মুরগি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় কেনা যেত তা এখন দুইশ টাকার ওপরে কিনতে হয়। এরসঙ্গে আছে পেঁয়াজ, রোসুন, তেলসহ অনান্য জিনিসের বাড়তি দাম। আমরা কী করবো। মানুষ না পারছে কইতে, না পারছে সইতে।
এদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঝে মধ্যে জেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান চালালেও তার খুব বেশি প্রভাব বাজারে পড়ে না। অভিযানের খবর পেলেই সঙ্গে সঙ্গে পুরো এলাকার দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে প্রতিদিন অভিযানে এক থেকে দুটির বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় আনতে পারছে না সংশ্লিষ্টরা।
পটুয়াখালী জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহম্মদ সেলিম বলেন, কেউ যাতে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে অধিক মুনাফা অর্জন করতে না পরে সেজন্য নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি।
ভোক্তাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে আপনারা প্রতারিত হলে কিংবা কেউ বেশি দামে কোনো পণ্য বিক্রি করলে আমাদের কাছে অভিযোগ জানান। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
Leave a Reply