নিজস্ব প্রতিবেদক // ১৯৯৯ সালে ইটের সলিং করা হয়েছিলো। এর উপর দিয়ে ৪টি গ্রামের মানুষ দিন-রাত যাতায়াত করছেন। তাদের যাতায়াতের একমাত্র পথই এটি। এরপরে ২২ বছর কেটে গেলেও এখানে লাগেনি কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া।
ফলে ইটগুলো এলোমেলো হয়ে খানা-খন্দকে ভরে গেছে প্রায় ৪ কিলোমিটারের রাস্তাটি। এখন এতোটাই নাজুক অবস্থা যে, পায়ে হেটে চলাচল করাও মুশকিল।
সদর উপজেলার দক্ষিণ পাঞ্জিপুথিপাড়া গ্রাম হয়ে কির্ত্তিপাশা সংযোগ সড়কের এমনই বর্ণনা দিলেন ওই এলাকার মো. হারুন।
তিনি জানান, সদর উপজেলার বাসন্ডা ব্রিজের পশ্চিম ঢাল দিয়ে নেছারাবাদ ইসলামী কমপ্লেক্স হয়ে সামনেই বাসন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের অধিনে।
এরপর পিপলিতা বাজার থেকে কেওড়া ইউনিয়ন হয়ে কিছুদূর সামনে গেলেই কির্ত্তিপাশা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঞ্জিপুথিপাড়া থেকে পাঞ্জিপুথিপাড়া দিয়ে শতবর্ষী বাউকাঠি হাট। দক্ষিণ বাংলার ঐতিহ্যবাহী পেয়ারারাজ্যেও এই রাস্তা দিয়ে যেতে হয়।
এ সড়কের দক্ষিণ পাঞ্জিপুথিপাড়া থেকে কির্ত্তিপাশা যেতে একটি সংযোগ সড়ক রয়েছে। এসড়কটির বয়সও শতাধিক বছর। আলীপুর, শশাংক, রমনাথ, নাপিতবাড়ি গ্রামের মানুষের কাঁদামাটি পার হয়ে চলাচল করতে হয়েছে।
তখন চলাচলকারীদের পরিহিত বস্ত্র আরেক সেট পরিধেয় কাপড় প্রস্তুত রাখতে হতো। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদেরও সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হতো। হোঁচট খেয়ে অনেক শিক্ষার্থীর বই-খাতা, জামা-কাপড় নষ্ট হয়ে স্কুলে যাওয়াও বন্ধ হয়ে যেতো।
এলাকাবাসীর অনুরোধে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর থেকে ২০০২ সালের দিকে ইটের সলিং রাস্তা নির্মাণ করা হয়। সেই ইটের সলিংয়ের পরে আর কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে নি।
এর মাঝে এ ৪ কিলোমিটার সড়কের পাশে শতাধিক পাকা ভবন উঠেছে। ভবনের নির্মাণ সামগ্রী বহনে রাস্তাটি এবরো-থেবরো অবস্থায় পরিণত হয়েছে।
সলিংয়ের ইট এলোমেলো হয়ে এখন এমন অবস্থা হয়েছে যা দিয়ে পায়ে হেটেও চলাচল করা বড়ই মুশকিল। রাস্তার মধ্য দিয়ে চলতে গেলে উঁচু-নিচু ইটে ধাক্কা লাগে পায়ের নখ উঠে যায়। পাশের ইটে শেওলা জন্মানোয় পাশ দিয়ে হাটা যাচ্ছে না। পা পিছলে ইতিমধ্যে অনেকে হোঁচটও খেয়েছেন।
পিপলিতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র বাপ্পী খান জানান, বাড়ি থেকে স্কুল অনেক দূরে। সাইকেল নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। শুকনো মৌসুমে যে কোনভাবে চালিয়ে গেলেও বর্ষা মৌসুমে চলাচল করতে বড়ই দুর্ভোগে পড়তে হয়। সাইকেল নিয়ে অনেকবার কাত হয়ে পড়ে আহতও হয়েছি।
এমন দুর্ভোগের কথা শুধু বায়োজ্যষ্ঠ মো. হারুন আর স্কুল ছাত্র বাপ্পীর না। ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী প্রত্যেকেরই রয়েছে দুর্ভোগের কারণে চরম ক্ষোভ আর হতাশা। এলাকাবাসী জানান, বর্তমান সরকার জনবান্ধব ও উন্নয়নমূলক।
অনেক স্থানে লোকজনের চলাচল নেই, তবুও সেখানে রাস্তা সংস্কার হচ্ছে। পিচ ঢালাই পাকা সড়কও নির্মাণ হচ্ছে। কিন্তু আমাদের জনগূরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির দিকে কেউ ফিরেও তাকায় নি।
স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. মেহেদী হাসান জানান, সড়ক উন্নয়নে এলজিইডির সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি।
বরাদ্দ আসলেই টেন্ডার দিয়ে কাজ শুরু করা হবে বলে ইঞ্জিনিয়ারের বরাদ দিয়ে তিনি জানান। এ বিষয়ে জানতে কির্ত্তিপাশা ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রহিম মিয়ার নম্বরে ১৭ আগস্ট বিকেলে বহুবার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি। ১০ দিন অপেক্ষা ২৭ আগস্ট সকালে আবার কয়েকবার কল দিলে তিনি কেটে দেন।
ঝালকাঠি এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমীন জানান, সদর উপজেলার দক্ষিণ পাঁজিপুথিপাড়া হয়ে কির্ত্তিপাশা সংযোগ সড়কটি অনক পুরাতন। সেটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। বরাদ্দ আসলেই টেন্ডার দিয়ে কাজ শুরু করা হবে।
Leave a Reply