জানা গেছে, শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক সরকারি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে ব্যক্তিগত চেম্বারে প্রতিদিন ৩-৪শ রোগী দেখেন। এমনকি সরকার নির্ধারিত সময় সকাল ৮টায় অফিসেও তারা আসেন না।
এ সংক্রান্ত বেশ কিছু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সোয়া ৯টার দিকে কলেজ অধ্যক্ষ ডা. মনিরুজ্জামান শাহিনের কক্ষে গেলে তাকে পাননি দুদক টিম। এমনকি অফিসের একজন পিয়নও উপস্থিত ছিলেন না।
দুদকের টিম আসার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি করে কার্যালয়ে আসেন কলেজ অধ্যক্ষ। দুদক টিম কলেজ অধ্যক্ষের কাছে চিকিৎসকদের এক সপ্তাহের বায়োমেট্রিক হাজিরার তালিকা দেখতে চান। তা দিতে অস্বীকার করেন কলেজ অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান শাহিন। এ নিয়ে দুদকের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, অভিযানকারী টিমের ছবি তুলে রাখার হুমকি দিচ্ছেন মনিরুজ্জামান শাহিন এবং কোনো তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ সময়ে দুদক টিম তাদের পরিচয় দিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বলে নিজেদের অভিহিত করেন।
তখন কলেজ অধ্যক্ষ পালটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, আপনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আর আমি (অধ্যক্ষ) কী উড়ে এসেছি নাকি! এর কিছুক্ষণ পরে কলেজের অন্যান্য চিকিৎসকরা আসতে শুরু করেন। সোয়া ১০টার দিকে চিকিৎসকরা এসে অধ্যক্ষের কক্ষে বায়োমেট্রিক হাজিরা দিতে শুরু করেন। দুদক টিম চলে যাওয়ার পরে কলেজ অধ্যক্ষ ডা. মনিরুজ্জামান শাহিন পালটা অভিযোগ করে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের টিম আমার কক্ষে এসে আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
তারা আমাকে তৃতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা বলে অভিহিত করেন। আমার কক্ষে ঢুকে যে আচরণ করেছেন তা তারা করতে পারেন না। আমি জেনেছি তাদের কেউ একজন ডাক্তার দেখাতে গিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। এজন্য তারা এসেছেন চিকিৎসকরা কখন আসেন তা দেখার জন্য।
দুদক টিম আমার কাছে বায়োমেট্রিক হাজিরার তালিকা চান। আমি স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের (ডিজি) সঙ্গে আলাপ করেছি। তিনি বলেছেন, দুদক টিম যদি আগে থেকে ঘোষণা দিয়ে না আসে, তাহলে সে হঠাৎ করে এসে কাগজ চাইতে পারে না। এগুলো দেইনি দেখে আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন।
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন বরিশালের সাধারণ সম্পাদক। এ বিষয়ে সব চিকিৎসকদের অবহিত করেছি। মনিরুজ্জামান শাহিন চিকিৎসকদের দেরিতে অফিসে আসার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, তা ঠিক আছে।
আবার অনেক সময় চিকিৎসকরা দেরিতে এসে দায়িত্ব পালন করে ৫টার সময়েও যান। তা কিন্তু কেউ বলেন না। তবে ডাক্তাররা অতিরিক্ত দেরিতে আসলে তা কেউ মেনে নেবে না। সরকারি দায়িত্ব অবহেলা করে ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসকরা সময় দেন বেশি অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, সরকার থেকে ব্যক্তিগত চেম্বার করা যাবে না এমন কোনো নির্দেশনা আছে বলে জানা নেই।যদি থাকে তাহলে চিকিৎসকরা ব্যক্তিগত চেম্বার করবেন না। তাছাড়া কতজন রোগী দেখতে পারবেন সে বিষয়েও কোনো নির্দেশনা নেই
Leave a Reply