সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফছানা আক্তার বলে, ‘ক্লাসে বসতে ভয় লাগে। কখন যেন ছাদ খসে মাথার ওপরে পড়ে।’
একই আশঙ্কা নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমানের। সে বলে, ‘মাথার ওপরে ছাদে ফাটল। পলেস্টার (পলেস্তারা) খসে খসে পড়ছে। বৃষ্টি হলে ছাদ চুয়ে পানি পড়ে। তখন আমাদের বই-খাতা ভিজে যায়। ক্লাস করলেও ভয়ের মধ্যে থাকি।
দশম শ্রেণির ছাত্রী তামান্না আক্তার বলে, ‘মাদরাসা ভবনের বয়স বেশি না হলেও পুরাতন ভবনের মতোই এর নাজুক অবস্থা। ভবনের পিলারে বড় বড় ফাটল। ছাদের পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। এতে দুর্ঘটনাও ঘটছে। এরআগে দাখিল পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান চলাকালে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে এক শিক্ষার্থী আহত হয়। আমরা ভয়ে ভয়ে ক্লাস করি।
কখন যেন আমাদের মাথার উপরেও ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ে। জীবনহানিসহ যে কোন সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এমন আতঙ্ক নিয়ে ক্লাসে বসি। শিক্ষকরা ক্লাসে আসলে তাদের মধ্যেও থাকে প্লাস্টার খসে পড়ার আতঙ্ক।
মাদরাসা সূত্র জানায়, ১৯৭৭ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হলেও তার ২০ বছর পর ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে চার কক্ষবিশিষ্ট একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে ভবনটির অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ। মাঝে মধ্যে বৈদ্যুতিক সরবরাহেও বিপর্যয় দেখা দেয়। শিশু থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে।
মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট মাওলানা মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি স্থানীয় এমপিসহ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তফা আলম বলেন, ‘আমি রাজাপুরে নতুন যোগদান করেছি। এখনো সব প্রতিষ্ঠান চিনতে পারিনি। তবে সড়কে যাতায়াতের পথে শুক্তাগড় মাহমুদিয়া দাখিল মাদরাসার একতলা একটি ভবন দেখেছি। ঝুঁকিপুর্ণ কি না তা জানা নেই। আমাকেও এখন পর্যন্ত কেউ জানায়নি। খুব শিগগির এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান খান বলেন, ‘মাহমুদিয়া মাদরাসার ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ শুনেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
Leave a Reply