মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি // শুভ্র শরতে মেঘমেদুর বরষা। বৃষ্টিসিক্ত আবহাওয়ার মধ্যে দিয়ে পার হয়েছে মহালয়া। ইতিমধ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন শুরু হয়েছে। পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের সূচনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। ধূপ, ধুনুচি আর ঢাকের তালে ক’দিন পরেই মেতে উঠবে রামগঞ্জ । ইতোমধ্যে দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে মণ্ডপ সাজানো ও নতুন জামা-কাপড় কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন রামগঞ্জের সনাতন সম্প্রদায়ের মানুষ। নিজের তৈরি প্রতিমাটি অন্যের চেয়ে সুন্দর ও শৈল্পিক করে তুলতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। মনের মাধুরী মিশিয়ে রং তুলিতে অবয়ব দিচ্ছেন প্রতিমাগুলোর। একই সাথে মন্দিরগুলোতে সাজসজ্জা, তোরণ ও প্যান্ডেল তৈরিসহ চলছে সার্বিক প্রস্তুতি।
রামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন পূজামন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, রংতুলির আঁচড়ে একেকটি প্রতিমা ফুটিয়ে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। তারা জানান, পূজার মন্ডপের আনুষঙ্গিক কাজ প্রায় শেষ। এখন বাকি মন্ডপের ভেতরের কাজ ও প্রতিমায় রংতুলি। প্রতিটি প্রতিমা রংতুলিতে ফুটিয়ে তোলার জন্য প্রতিমা শিল্পীদের চেষ্টার কোনো কমতি নেই। আগামী সোমবার (১অক্টোবর) ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গোৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা। রামগঞ্জে সর্বত্র শারদীয় উৎসবের প্রস্তুতি এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। দিন-রাত এক করে এখন রঙ আর তুলির আঁচড়ে শেষ রূপায়নের কাজ করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। শিল্পীর রংতুলির ছোঁয়ায় প্রতিটি প্রতিমা জেগে উঠছে স্ব-মহিমায়। তুলির শৈল্পিক আঁচড়ে জীবন্ত হয়ে উঠছে মা দুর্গা, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী, লক্ষ্মী ও মহিষাসূরের প্রতিমা। প্রত্যেক শিল্পীরা চান নিজের তৈরি প্রতিমা অন্যের চেয়ে সুন্দর ও শৈল্পিক করে তুলতে। তাই তারা মনের মাধুরী মিশিয়ে এখন দুর্গা প্রতিমাসহ বিভিন্ন প্রতিমার অবয়ব দিচ্ছেন। সেইসাথে মন্দিরগুলোতে সাজসজ্জা,গেট ও প্যান্ডেল তৈরিসহ সার্বিক কাজও চলছে এগিয়ে।
উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অপুর্ব কুমার সাহা বলেন, এবারের পূঁজাকে সার্বজনীন উৎসবে রূপ দিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীর সকলকে নিয়ে আনন্দ করতে চাই। অশুর বিনাসী দেবীর এই আগমন উপলক্ষে সাধ্যমত আয়োজন সম্পন্ন করার প্রাণান্তকর চেষ্টা আমাদের। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও প্রতিটি মন্ডপে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশনা মেনে শারদীয় দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। তবে এ নির্দেশনায় তাদের উৎসবের কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না
রামগঞ্জ থানার ওসি মোঃ এমদাদুল হক বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নের বিট পুলিশ এবং পূজামন্ডপের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে আমাদের সভা হয়েছে। দূর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে উদযাপনে সার্বিক নিরাপত্তায় আইনশৃংখলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে পুলিশের টহলে থাকবে। এছাড়া প্রতিটি মন্দির ও পূজামন্ডপের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে কমপক্ষে দুজন করে আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবে।
Leave a Reply