নদীপাড়ের বাসিন্দারা জানান, সাগর উপকূলীয় অঞ্চলে জুন থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত দুর্যোগ মৌসুম। আর এই দুর্যোগ মৌসুম মানেই উপকূলবাসীর জন্য বন্যা কিংবা জলোচ্ছ্বাসের আতঙ্ক।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (ডিভিশন-২) সূত্রে জানা গেছে, চরফ্যাশন উপজেলায় ৮৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে মুজিবনগরে সাড়ে ১৫ কিলোমিটার এবং কুকরিমুকরি ইউনিয়নে ১৪ কিলোমিটার। তবে এখনো বাঁধহীন রয়েছে ১৩ কিলোমিটার।
ঘোষের হাট এলাকার তেঁতুলিয়া নদীপাড়ের বাসিন্দা বশির চকিদার (৬৫) বলেন, ‘গবাদিপশু, চাষের জমি, এমনকি পরিবার, জীবনসহ সবকিছুই বিপদের মুখে রেখে বসবাস করতে হয় নদীর তীরের মানুষদের। কত ঝড়-বন্যা আর ভাঙন আমাদের নিত্যসঙ্গী। ভাঙনে ধরা গ্রামের মানুষগুলোকে বারবার বসত পাল্টাতে হয়। এমনিতেই গরিব, তার ওপর আবার বসতভিটা, চাষের জমি, থাকার ঘরও খোয়া যায় ভাঙনে। তাই অভাব কাটে না। বেড়িবাঁধ থাকলে হয়তো এমন ক্ষতি হতো না।’
একই এলাকার কবির মাঝির (৫৫) পেশা মাছ ধরা। পাঁচ একর জমির ওপর বাড়ি ছিল তাঁর। নদীভাঙনে এখন সব হারিয়ে সর্বস্বান্ত। কবির মাঝিকে সাতজনের সংসার চালাতে নদীতে মাছ ধরতে নামতে হয়েছে অনেক আগেই। অথচ একসময় নিজের জমিতেই আবাদ করে সংসার চালাতেন। তিনি বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে উপকূলজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করে। বেড়িবাঁধ না থাকায় বাড়িঘর জোয়ারের পানিতে ডুবে থাকে। গত বছরের এমন দিনে জোয়ারের পানিতে হাঁস-মুরগি ও দুইটা ছাগল ভেসে গেছে।’
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (ডিভিশন-২)-এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়া দুই কিলোমিটার, বাবুরহাট দুই কিলোমিটার, গাছির খাল এক কিলোমিটার, ঘোষের হাট থেকে কাশেম মিয়ার বাজার দুই কিলোমিটার এবং মুজিবনগর ছয় কিলোমিটার বাঁধহীন রয়েছে। ভাঙনপ্রবণ এলাকায় বাঁধ মেরামতের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। বর্ষা শেষে ওই স্থানে ভাঙন রোধে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হবে।’
Leave a Reply