নিজস্ব প্রতিবেদক // লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মাদক সেবনের জন্য ১০ টাকা না দেওয়ায় মা শেফালি বেগমকে কুপিয়ে হত্যা করে ছেলে। এ ঘটনায় ছেলে মো. জাফরের (২৭) আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার বেলা সোয়া ১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামি জাফর মাদকাসক্ত ছিল। ১০ টাকা না পেয়ে মাকে কুপিয়ে হত্যা করে সে। আদালত তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল।
জাফর রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাখালিয়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে। ঢাকায় সুইপারের চাকরি করত সে।
এজাহার সূত্র জানায়, চাকরি হারিয়ে জাফর এলাকায় বেকার ঘোরাফেরা করত। এক সময় স্থানীয় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে সে। বন্ধুদের কাছ থেকে টাকা ধার নিত জাফর। পরে মা শেফালি বেগমের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বন্ধুদের পাওনা পরিশোধ করত।
২০২০ সালের ২৮ আগস্ট সকালে জাফর মায়ের কাছে ১০ টাকা দাবি করে। মা টাকা না দিতে চাইলে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে ধারালো দা দিয়ে মাকে কুপিয়ে হত্যা করে সে। ওইদিন রাতে জাফরকে আসামি করে তার বাবা হোসেন আলী রায়পুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে জাফরকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই বছরের ২৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রায়পুর থানার এসআই মোহাম্মদ সাফায়েত উল্যা আদালতে জাফরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এদিকে, আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না। পরে আইনজীবী হাবিবুর রহমানকে আসামির পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেন আদালত।
আইনজীবী হাবিবুর রহমান জানান, জাফর মাদক সেবনের কারণে মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিল। নেশা করার টাকা না পেয়ে নিজের মাকে হত্যা করেছে। এর জন্য দায়ী মাদক। ডাক্তারি পরীক্ষা করে ঘটনাটি তদন্ত করলে সে এ মামলার আসামি হতেন না। কারণ, মাকে হত্যার ব্যাপারে তার মানসিক প্রস্তুতি ছিল না। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।
Leave a Reply