ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে উত্তাল সমুদ্র উপভোগ করতে শত শত পর্যটক ও দর্শনার্থীরা ভিড় জমিয়েছে কুয়াকাটা সৈকতে।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকে সমুদ্রে গোসল ও আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন আগতরা। ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পক্ষ থেকে মাইকিং করা হলেও তা কর্ণপাত করছে না তারা।
এদিকে ক্রমেই কুয়াকাটা-সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। বৃষ্টির পাশাপাশি বইছে দমকা ঝোড়ো বাতাস। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করেছে। টানানো হয়েছে ঘূর্ণিঝড় সতর্কতায় সংকেত পতাকা। প্রবল গতিতে ধেয়ে আসছে ঘুর্ণিঝড় মিথিলি। আবহাওয়া অধিদপ্তর ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির তথ্যমতে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে ২৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করলেও স্থানীয় মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে দেখা যায়নি। উপকুলের বেড়িবাঁধের বাহিরে বসবাসকারীদের মাঝে এ নিয়ে তেমন উদ্বেগ উৎকণ্ঠা দেখা যায়নি।
অপরদিকে মিধিলির প্রভাবে ভাটার সময়ও স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার থেকে ৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে সমুদ্র তীরে এসে আঁচড়ে পড়ছে বড় বড় ঢেউ। ঢেউয়ের তাণ্ডবে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে থাকা ভাসমান দোকান, ছাতা, বেঞ্চ ভেসে যেতে দেখা গেছে। ঝোড়ো বাতাস ও উত্তাল সমুদ্রে টিকতে না পেরে গভীর সমুদ্রে থাকা হাজারও মাছধরা ট্রলার আলীপুর-মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন নদ-নদীতে এসে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য আড়তদার সমিতির নেতারা। তবে অনেক ট্রলার এখনও সমুদ্র থেকে উঠে আসছে বলে জানিয়েছেন মৎস্যজীবীরা।
জামালপুর থেকে আসা পর্যটক আজিজুর রহমান বলেন, গত পরশুদিন সপরিবারে কুয়াকাটায় এসেছি। হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হয়ে যাওয়ায় ফিরে যাচ্ছি না। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল হয়েছে। উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ দেখতে সৈকতে নেমেছি। উত্তল ঢেউ দেখতে অনেকটা ভালো লেগেছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার সতর্ক করা হচ্ছে। তারপরও সৈকতে নেমে ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালী করেছি।
অপর একজন পর্যটক আহমেদ শফিক বলেন, জীবনের এই প্রথম দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে কুয়াকাটা সৈকতে এসেছি। উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ দেখার প্রথম অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম। ঘূর্ণিঝড়ে আতঙ্ক থাকলেও সৈকতে আমার মতো অনেক পর্যটক দর্শনার্থী ভিড় করছেন।
কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ জোনের ইনচার্জ হাসনাইন পারভেজ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে সমুদ্র অনেকটা উত্তাল রয়েছে। যার কারণে মাইকিং করে আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীদের সৈকতের নেমে গোসল করতে নিষেধ করা হচ্ছে। তারপরও সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে কিছু সংখ্যক পর্যটক আনন্দ উপভোগ করছেন। তবে কেউ যাতে গভীর সমুদ্রে না যায় সেদিকে আমাদের খেয়াল আছে।