রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ চলছে। সেই সংঘর্ষের গুলিতেই প্রাণ গেল ছোট্ট আবদুল আহাদের। গুলিটা ডান চোখে বিদ্ধ হয়ে মাথার ভেতরেই আটকে গেছে। শুক্রবার (১৯ জুলাই) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা। শনিবার (২০ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আহাদকে মৃত ঘোষণা করে চিকিৎসক।
আবুল হাসান যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকার একটি ভবনের আটতলায় পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন। তার দুই ছেলে। বড় ছেলে দিহান মাতুব্বর (১১) ও ছোট ছেলে আহাদ (৪)। তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নে। তিনি আয়কর বিভাগের উচ্চমান সহকারী হিসেবে কর্মরত আছেন।
মেট্রোরেল চালুর বিষয়ে যা বললেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
এদিকে রক্তাক্ত ছেলেকে কোলে নিয়ে দ্রুত নিচে নেমে আসেন হাসান। এ সময় অস্ত্রধারীরা এগিয়ে এসে তাকে বাধা দেয়। পরে ছেলের রক্তাক্ত অবস্থা দেখে তারা সরে দাঁড়ায়। আহাদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা বলেন, গুলি মাথার মধ্যে আছে। কিন্তু কোনো অবস্থানে আছে, তা বোঝার জন্য সিটিস্ক্যান করতে হবে। কিন্তু সিটিস্ক্যান করতে নেয়া হলে আইসিইউর যন্ত্রপাতি খুলে ফেলতে হবে। এতে শিশুটির মৃত্যুও হতে পারে। তবে সিটিস্ক্যান করাও জরুরি।
শিশু আহাদের বাবা আবুল হাসান জানান, ‘একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শিকার হয়ে আমার ছেলে চলে গেল। এ নিয়ে আমি আর কী বলব? চেয়েছিলাম পোস্টমর্টেম না করতে। অতটুকু শরীর যাতে আর কাটাছেঁড়া করা না হয়। কিন্তু আমাদের সে চেষ্টাও সফল হয়নি।’
নিহত আহাদের চাচা মোখলেসুর রহমান জানান, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর দিন শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আহাদকে মৃত ঘোষণা করে চিকিৎসক। মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে রোববার বেলা ৩টার দিকে আহাদের মরদেহটি তারা বুঝে পান। তারপর অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ নিয়ে আসেন গ্রামের বাড়িতে।
অন্যদিকে কাঁদতে কাঁদতে আহাদের চাচা মোখলেসুর রহমান আরও জানান, ‘নতুন কবরস্থান করা হয়েছে। আহাদকে দাফনের মধ্য দিয়েই কবরস্থানটির যাত্রা শুরু হলো।
সম্পাদক : মো: রাকিবুল হাছান ।