নিজস্ব প্রতিবেদক // বরিশালের উজিরপুরে নদী ভাঙনরোধে তৈরি অর্ধকোটি টাকার পাথরের ব্লক ট্রাকযোগে নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত কর্মকর্তার নাম মো. শাকিল ইসলাম। তিনি বরিশাল পাউবো কার্যালয়ে উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত বলে জানা গেছে।
পাউবো অফিস ও স্থানীয় সূত্র জানা যায়, উজিরপুরে সন্ধ্যা নদীসহ বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙন রোধের জন্য পাউবোর ঠিকাদাররা পাথরের ব্লকগুলো তৈরি করেন। কয়েক দিন আগে কয়েকটি ট্রাকযোগে সরকারি ব্লকগুলো শাকিল ইসলামের গ্রামের বাড়ি উজিরপুরের হস্তিশুণ্ড ঈদগাহ মার্কেট এলাকায় নিয়ে আসা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মফিজুর রহমান বলেন, শাকিল ইসলামের বাড়িতে আনা ব্লকগুলোর ওপর সিরিয়াল নম্বরসহ ইংরেজিতে ডব্লিউ ডি বি খোদাই করে লেখা আছে। বর্গাকৃত ব্লকগুলো কোনোটির দৈর্ঘ্য এক ফুট আবার কোনোটির দৈর্ঘ্য দেড় ফুট হবে। তবে প্রতিটির প্রস্থ এক ফুটের মতো। যে পরিমাণের ব্লক আনা হয়েছে তার মূল্য অর্ধকোটির টাকারও বেশি হবে।
বৃহস্পতিবার শাকিল ইসলামের বাড়ি ও নির্মাণাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গিয়ে দেখা যায়, ওই বাড়ির বেশ কিছু অংশজুড়ে পাউবোর তৈরি কয়েকশ’ ব্লক সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া শাকিল ইসলামের গ্রামের বাড়ির অদুরে নির্মাণাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পেছনে ব্লকগুলো সারিবদ্ধভাবে রেখে প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া তার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চারপাশ ঘিরে রাখা ব্লকের ফাঁকা অংশ বালু দিয়ে ভরাটের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী শাকিল ইসলাম বলেন, ‘নদী ভাঙন রোধের জন্য ভাঙন এলাকায় ব্লক স্থাপনের কাজ শেষে বেশ কিছু ব্লক উদ্বৃত্ত ছিল। সেগুলো এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন এলাকায় পড়ে ছিল। ঠিকাদাররাও ফেরত নিচ্ছিল না। তাই আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই ব্লকগুলো বাড়িতে নিয়েছি।’
তবে পাউবোর কোন কোন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করেছেন এমন প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সালাম বলেন, পাউবোর ব্লক শাকিল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে রাখা ঠিক হয়নি। লোক মুখে শুনে ব্লকগুলো যথাস্থানে ফেরত পাঠানোর জন্য তাকে মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি একজন কর্মকর্তার এ ধরনের কাজ পুরোপুরি অনৈতিক। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।