জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি খন্দকার মোশতাক আহমেদের ছেলে খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বাবু বাহিনীর প্রধান নিজাম উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার গভীর রাতে রাজধানীর আগামসি লেন বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে দাউদকান্দি মডেল থানা পুলশে। নিজাম উদ্দিন (৫৩) কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার ভাগলপুর গ্রামের মৃত রওশন আলী ওরফ আব্দুস সোবহানের পুত্র এবং বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাকের বাড়ির কেয়ারটেকার।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারী) দুপুরে দাউদকান্দি মডেল থানার ওসি মোজাম্মেল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রতারণাসহ একাধিক মামলার আসামি নিজাম উদ্দিনকে মঙ্গলবার রাতে আমাদের একটি টিম রাজধানী আগামসি লেনের খন্দকার মোশতাকের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, খন্দকার মোশতাক আহমেদের ছেলে ইশতিয়াক আহমদ বাবুর আমমোক্তারনামা বলে নিয়োজিত কেয়ারটেকার নিজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে ও বাবুর অর্থবিত্তে লালিত বাহিনীর অত্যাচার-নিপীড়নে এলাকার সাধারণ মানুষ জিম্মি ছিল।
সুন্দলপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি দশপাড়া গ্রামের মাহবুবুর রহমান বাবুল বলেন, নিজাম গ্রেফতার হওয়ায় আমরা এবং এলাকার সাধারণ মানুষ খুশি। তবে নিজাম উদ্দিনের সেল্টারদাতা মোশতাকপুত্র বাবুকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান তারা।
নিজাম উদ্দিনের গ্রেফতারের খবরে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ভুক্তভোগী একটি মামলার বাদি কাজী রেহা কবির বলেন, একের পর এক হামলা মামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছে আমার পরিবার। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ দেশের ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও খুনি মোশতাকপুত্র পলাতক ইশতিয়াক আহমদ বাবু ও তার প্রেতাত্মাদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বাবুর অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ও গুটিকয়েক ব্যক্তিকে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে এলাকায় তার বাহিনীর মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।
তিনি আরো জানান, খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ তাদের পূর্বপুরুষের সম্পত্তি দখলে রাখতে এলাকায় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেন। এরই মধ্যে মোশতাকপুত্র বেশ কিছু সম্পত্তি জাল দলিল ও ভুয়া স্বাক্ষরে বিক্রয় করে দেন। এনিয়ে আদালতে প্রতারণা মামলায় ইশতিয়াক আহমেদ বাবু, তার ছেলে ইফতেখার আহমেদ শাদ ও কেয়ারটেকার নিজামুদ্দিনকে আসামি করা হয়। বর্তমানে খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বাবু ও খন্দকার ইফতেখার আহমেদ শাদ কানাডায় পলাতক রয়েছেন।
কাজী রেহা কবির বলেন, আমার চাচা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও ভাষা সৈনিক কাজী আব্দুল বারি বঙ্গবন্ধু হত্যার পর প্রতিবাদকারীদের একজন। খন্দকার মোশতাক আমার নানার পরিবারের সদস্য হলেও আদর্শগত কারণে তাদের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক ছিল না। আমার মামা নাসিরুল কবিরের করা মামলায় নিজাম উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের অবিলম্বে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতার করে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের দাবি জানান তিনি।