1. faysal.rakib2020@gmail.com : admin :
  2. ukbanglatv21@gmail.com : Kawsar Ahmed : Kawsar Ahmed
মেঘনায় অভয়াশ্রমে নিষেধাজ্ঞাকে পুঁজি করে হরিলুট, শেষ সময়েও চলছে অবাধে মাছ শিকার - বাংলার কন্ঠস্বর ।। Banglar Konthosor
বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন

মেঘনায় অভয়াশ্রমে নিষেধাজ্ঞাকে পুঁজি করে হরিলুট, শেষ সময়েও চলছে অবাধে মাছ শিকার

  • প্রকাশিত :প্রকাশিত : সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১৫ 0 বার সংবাদি দেখেছে

বিশেষ প্রতিনিধিঃ ইলিশ সহ অন্যান্য মাছের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে মেঘনা নদীর অভয়াশ্রমে ২ মাস সব ধরনের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞাকে পুঁজি করে অসাধু কিছু মৎস্য ব্যবসায়ী,জেলে, সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর কিছু কর্মকর্তা,কর্মচারী ও মাঝিদের যোগসাজশে হরিলুটের অভিযোগ, শেষ সময়েও চলছে অবাধে মাছ শিকার। মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইনে ২০১৯ সালে সরকার দেশের ষষ্ঠ অভয়াশ্রম হিসেবে বরিশালের হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ-সংলগ্ন মেঘনা নদী ও এর শাখা নদীগুলোকে অভায়শ্রম হিসেবে গেজেটভুক্ত করে। মার্চ এপ্রিল ২ মাস এই অভয়াআশ্রমে যেকোনো ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে অথচ বরিশালের হিজলা উপজেলায় মেঘনা নদী সহ শাখা নদীগুলোতে ছোট ছোট নৌকা নিয়ে নিয়মিত ইলিশ ও বেরজাল দিয়ে অন্যান্য মাছ শিকার চলছেই, এসব মাছ শিকার করতে ব্যবহৃত হচ্ছে অবৈধ কারেন্ট জাল ও বেড় জাল। বেড় জালে মাছের ডিমসহ দেশি জাতের বিলুপ্তপ্রায় ছোট–বড় মাছ, বিভিন্ন জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ উঠে আসে। এতে মাছের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞার এই সময়টাতে অর্থের বিনিময়ে মাছ শিকারের সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগ খোদ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নকারী দফতর গুলোর বিরুদ্ধে। মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের শতভাগ চেষ্টারত দাবীদার উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার অফিস ও নৌ পুলিশ ফাড়ির কয়েকশ গজের মধ্যে বাউশিয়া খেয়া ঘাটের উল্টো পাশে পাশাপাশি ৪টি বেড়জাল দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে নিয়মিত, পুরো উপজেলা জুড়ে এরকম বেড়জাল রয়েছে শতাধিক। নিষেধাজ্ঞার মাঝেও প্রশাসনের নাকের ডগায় কিভাবে অবৈধ ভাবে মাছ শিকার করছেন জানতে চাইলে স্থানীয় বেড়জাল মালিক কালাম মাঝি বলেন সব কিছু ম্যানেজ করেই করছেন তারা। এখান থেকে ধরা ইলিশ, বেলে আইড় সহ বিভিন্ন নদীর মাছ স্থানীয় কয়েকটি বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রিও হচ্ছে। এ ছাড়া এসব মাছ যাচ্ছে চাঁদপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর জেলা ও রাজধানী ঢাকায়। এছাড়াও নিয়মিত মাছ বেচাকেনা হচ্ছে উপজেলার প্রায় ৭০টির বেশি মাছ ঘাটে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ওরাকুল ঘাটে সুজন দফাদার,আলাউদ্দিন দফাদার উপজেলার ৭নং ঘাটে ফরহাদ রাড়ী, বালির চরে আনিস,৯নং ঘাটে সেলিম, ধুলখোলার ইউসুফ, চর কিল্লার কবির, খইলসার চরের জসিম রাড়ি,খালিসপুরের আবু বেপারি,কবির,কলার গাওয়ের মাসুম,সাতপাড়ার জুয়েল, লাসোকাঠির সাত্তার দপ্তরি, ধুলখোলায় বসির সরদার, লিটন রাড়ি, মল্লিক পুরের মুখে রত্তন রাড়ি, ৭ং ঘাটের মাঝামাঝি হোসেন মোল্লা সহ অন্যান্যরা।

নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে এসব মাছ ঘাট ঘুরে দেখা যায় নির্বিঘ্নে চলছে মাছ কেনা-বেচা।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, প্রতিবছরই নিষেধাজ্ঞার সময় চাঁদপুর-সংলগ্ন মেঘনার হাইমচর, বরিশালের হিজলা, মুলাদি মেহেন্দীগঞ্জ-সংলগ্ন মেঘনা, এর শাখানদী মেঘনাসহ বেশ কিছু এলাকায় জেলেরা স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে কারেন্ট জাল ও বেড় জাল দিয়ে মাছ শিকার করছে। প্রতি বছরের চেয়ে এবার আরও বেশি নৌকা ও বেড় জাল দিয়ে মাছ শিকার চলছে এসব এলাকায়।

হিজলা উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের আহবায়ক এ্যাডঃ রেজাউর রহমান রেজা বলেন অভয়াশ্রমে মাছ শিকার নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে প্রশাসন ও স্থানীয়দের আরো আন্তরিক হতে হবে, অর্থের লোভে একদল সুযোগ করে দিচ্ছে আরেক দল মাছ শিকার করছে এটা দুঃখজনক। দিনের আলোতে যেসব নামেমাত্র অভিযান পরিচালনা হচ্ছে সেখানেও জেলেদের কাছ থেকে আটক করা জাল ও মাছগুলো অন্যত্র বিক্রি এবং ভাগ বাটোয়ারার অভিযোগ মৎস্য কর্মকর্তা, কর্মচারী, মাঝি এবং নৌ পুলিশের বিরুদ্ধে, যা আরো ভয়ংকর বলে দাবি করেছেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট দফতরের সাবেক এক মাঝি বলেন বর্তমান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হিজলাতে জয়েন করার পরে অনেকগুলো অভিযান পরিচালনা করলেও হঠাৎ তিনি যেন থমকে গেছেন, বর্তমানে তিনি বড় কোনো অভিযান পরিচালনা করছেন না, শাওরা সৈয়দখালী নদীতে যাচ্ছেন না, কোনো রকম ভাবে দিন পার করছেন। তার কারণ হিসেবে তিনি বলেন এখন প্রতিটি ঘাট মালিক হয়তো তার সাথে যোগাযোগ করছে।
এসব বিষয়ে হিজলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আলম এর সাথে কথা বলতে তার অফিসে গিয়ে তাকে না পেয়ে তার মোবাইল নাম্বারে কয়েকদিন একাধিক ফোন কল এবং তার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে একাধিক মেসেজ দিয়েও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি তবে তিনি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ চেক করেছেন কিন্তু উত্তর দেননি।
এবিষয়ে হিজলা নৌ পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ জনাব তরিকুল ইসলাম এর সাথে কথা বললে অভিযোগের বিষয়গুলো অস্বীকার করে তিনি বলেন মার্চ মাসে আমরা যৌথ অভিযানে ২৮৯ জন গ্রেপ্তার করেছি যার মধ্যে ১২টি মামলার মাধ্যমে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছি, অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় মুচলেকার মাধ্যমে ৪৮ জনকে ছেড়ে দিয়েছি এবং ২২৩ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে যা ২০২৩ সালের প্রায় ছয় গুনের ও বেশি, এছাড়াও ৪ হাজার ৩শত ৫ কেজি মাছ আটক করে বিভিন্ন এতিমখানায় বন্টন করা হয়েছে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Comments are closed.

‍এই ক্যাটাগরির ‍আরো সংবাদ