সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের একমাত্র ছেলে নিবিড় কুমার। ছেলের জন্য বাবা-মা দুজনেরই ঠিকানা এখন কানাডার সেন্ট মাইকেল হাসপাতালে। মাঝে দু’বার দেশে এসেছেন কুমার বিশ্বজিৎ, তাও অল্প সময়ের জন্য। বর্তমানে ‘চিরসবুজ’খ্যাত এই গায়ক ঢাকায় অবস্থান করছেন। ছেলের কাছে ফিরে যাবেন আগামী সোমবার। এর মধ্যে মুখোমুখি হয়ে কথা বলেছেন নিবিড়ের বর্তমান অবস্থা ও গান-বাজনা প্রসঙ্গে।
নিবিড় এখন কেমন আছে?
সবার দোয়া ও আশীর্বাদে নিবিড় আগের থেকে অনেকটা ভালো। প্রায় ১০ মাস তো ও হাসপাতালের বিছানাতেই শুয়ে ছিল, চোখ মেলেও তাকায়নি। এখন ওকে তুলে চেয়ারে বসানো যায়, তাকিয়েও দেখে। পুরোপুরি ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতে পারে না, তবে চোখ ঘুরিয়ে দেখার চেষ্টা করে। এখনো ওকে কৃত্রিমভাবে খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। লম্বা সময় লাগবে ওর স্বাভাবিক হতে। আশা নিয়েই আমরা (কুমার বিশ্বাস ও তার স্ত্রী নাঈমা সুলতানা) অপেক্ষায় আছি।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা কী বলছেন?
নিবিড় সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয় গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারিতে। যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখান থেকে বেঁচে ফেরাটাও ছিল অনেক কঠিন। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রাতদিন ওর পাশে থেকেছে। সবার দোয়ায় বেঁচে গেছে। দোয়া আর চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রম- আমাদের আশার আলো দেখিয়েছে। ওর পুরোপুরি সুস্থ হতে অনেক সময় লাগবে। আমি কানাডায় যাওয়ার পর হাসপাতাল থেকে ওকে রিহ্যাবে নেওয়া হবে। সেখানে ফিজিওথেরাপি, স্পিচথেরাপি, স্টিমিউলেটেড থেরাপি চলবে। যখন ওর ব্রেইন সাড়া দেবে, তখন অনেক কিছুই স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। এই সময়টাও অনেক দীর্ঘ।
আপনাদের সময় কাটে এখন ছেলের পাশেই। এবার গেলে আবার কবে দেশে আসবেন?
সেটাও বলা মুশকিল। তবে ইচ্ছে আছে, আগামী অক্টোবরে দেশে আসার। দেশে ফিরে একটা সংবাদ সম্মেলন করব। ওই সময় সংগীতের চার দশক পূর্তির একটি আয়োজনও করার ইচ্ছে আছে। যদিও এই আয়োজনটা আমার অনেক আগেই করার কথা ছিল। কিন্তু এর মধ্যেই তো সব এলোমেলো হয়ে গেল।
গান থেকেও তো দূরে আছেন…
একটা মানুষের প্রাণ মরে গেলে গান হয় না। ৪০ বছর গান গেয়েছি আর দেড়-দুই বছর গান না গাইলে কী হবে! চেষ্টা করব, গানের সঙ্গে থাকতে। সবাই বলছে গানের মধ্যে থাকলে, মন কিছুটা হলেও ভালো থাকবে। এই সময় আমার ভালো থাকাটা খুব জরুরি। আমি ভালো থাকলে ওরই কাজে লাগবে। চলতি বছর শুরুর দিকে ‘নিবিড় অপেক্ষা’ শিরোনামে একটি গান প্রকাশ করেছি। যেখানে মনের চাপা কষ্টগুলোর কথা বলেছি!