1. faysal.rakib2020@gmail.com : admin :
  2. ukbanglatv21@gmail.com : Kawsar Ahmed : Kawsar Ahmed
টাকা মুদ্রণে বছরে খরচ ৩৮৪ কোটি টাকা - বাংলার কন্ঠস্বর ।। Banglar Konthosor
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২২ অপরাহ্ন

টাকা মুদ্রণে বছরে খরচ ৩৮৪ কোটি টাকা

  • প্রকাশিত :প্রকাশিত : সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০২৪
  • ১৫ 0 বার সংবাদি দেখেছে
জিয়াদুল ইসলাম // দেশে বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে প্রচলিত বিভিন্ন মূল্যমানের টাকা (মুদ্রা) মুদ্রণে প্রতিবছর প্রায় ৩৮৪ কোটি টাকা খরচ হয়। এই খরচ সাশ্রয়ে ক্যাশলেস লেনদেন বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে এ সংক্রান্ত এক সভায় বলা হয়েছে, সর্বজনীন ক্যাশলেস লেনদেন বাস্তবায়ন করতে হলে ডিজিটাল পেমেন্টের সঙ্গে জড়িত সব ব্যাংক, পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি), পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসও) ও এমএফএসসহ সব স্টেকহোল্ডারের মধ্যে সমন্বয়সাধন করতে হবে। ক্যাশলেস লেনদেন শহর থেকে গ্রামপর্যায়ের হাট-বাজারে নিয়ে যেতে মাঠ প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করতে হবে। সম্প্রতি সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আইসিটি সেল কর্তৃক ‘ক্যাশলেস লেনদেন বাস্তবায়ন’সংক্রান্ত ওই সভার আয়োজন করে। এ সময় ক্যাশলেস লেনদেন বাস্তবায়নে করণীয় নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হককে প্রধান করে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।

ওই সভার কার্যবিবরণী পর্যালোচনায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. মাহমুদুল হোসাইন খান। সরকার আশা করছে, ক্যাশলেস লেনদেন বাস্তবায়িত হলে নগদ অর্থ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট এই খরচ সাশ্রয়ের পাশাপাশি লেনদেনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। সেই সঙ্গে সহজে আয়-ব্যয়ের হিসাব ট্র্যাক করা সম্ভব হবে। ফলে আয়কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা কমে আসবে এবং মানিলন্ডারিং অনেকাংশে হ্রাস পাবে।

সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ‘ ভিশন, বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-৪১ এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বয় রেখে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেমে আনয়নের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ’ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ উদ্যোগের আওতায় ২০২৭ সালের মধ্যে দেশের ৭৫ শতাংশ লেনদেন ডিজিটাল করার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারের পক্ষ থেকেও ক্যাশলেস লেনদেন বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে গত ৩০ জানুয়ারি সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আইসিটি সেল কর্তৃক ‘ক্যাশলেস লেনদেন বাস্তবায়ন’সংক্রান্ত এক সভার আয়োজন করে। ওই সভায় ক্যাশলেস বাংলাদেশের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের নির্বাহী মো. মেজবাউল হক। এতে ক্যশলেস লেনদেন কী, এর উপকারিতা ও ঝুঁকি, ক্যাশলেস লেনদেনের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়।

সভায় বলা হয়, বর্তমানে দেশে ডিজিটাল পেমেন্ট করার জন্য যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। যেমন- কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, কিউআর কোড, এমএফএস এবং মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে ডিজিটাল পেমেন্ট সম্পন্ন করা যায়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, দেশে শহরভিত্তিক কিছু বড় দোকান ও মার্চেন্ট আউটলেট রয়েছে। সরকারি-বেসরকারি সেবার ক্ষেত্রে ডিজিটাল পেমেন্টের ব্যবস্থা থাকলেও দেশের অধিকাংশ স্থানেই ডিজিটাল পেমেন্টের সুযোগ সৃষ্টি হয়নি বা পর্যাপ্ত অ্যাকসেস পয়েন্ট নেই। ফলে ব্যাংক, এমএফএস ও পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডর (পিএসপি) এর অধিকাংশ ই-মানিকে পুনরায় নগদে রূপান্তর করে লেনদেন করতে হচ্ছে। সব ধরনের পেমেন্টের ক্ষেত্রে ই-মানি ব্যবহার করা গেলে এ ধরনের কনভার্সন প্রয়োজন হতো না। এমন অবস্থায় ক্যাশলেস লেনদেন বাস্তবায়নে যে সব বিষয় বেশি প্রয়োজন তা হচ্ছে পরিসেবা প্রদানকারীর সক্ষমতা, সেবাদানকারীদের মধ্যে ইন্টার-অপারেবিলিটি ও ডিজিটাল পেমেন্ট করার জন্য পর্যাপ্ত অ্যাকসেস পয়েন্ট তৈরি। এ ছাড়া ডিজিটাল লেনদেনের বিষয়ে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করাও প্রয়োজন।

মেজবাউল হক বলেন, ক্যাশলেস লেনদেন বাস্তবায়নে দেশব্যাপী সকল স্থানে ডিজিটাল অ্যাকসেস পয়েন্ট তৈরিতে বিশেষভাবে জোর দিতে হবে। এসব পয়েন্ট ব্যবহার করে ক্যাশলেস লেনদেনে জনগণকে উৎসাহিত করতে হবে। দেশের সব হাট-বাজার দোকান ও অন্যান্য স্থানে ক্যাশলেস লেনদেনের ইকোসিস্টেম তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে ক্যাশলেস লেনদেনকারী ব্যবসায়ী ও সেবাগ্রহীতাদের প্রণোদনা প্রদান করা যেতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক শাহ জিয়াউল হক বলেন, মার্চেন্টদের ডিজিটাল লেনদেনের আওতায় আনতে হলে মার্চেন্টদের ডিজিটাল লেনদেনে এক্সটা বেনিফিট দিতে হবে। পাশাপাশি কাস্টমারদেরও ডিজিটাল পেমেন্টে ইনসেনটিভ প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে পারে। ভারত এ ধরনের ইনসেনটিভ প্রদান করে আসছে। তিনি আরও বলেন, ক্যাশলেস লেনদেন বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হবে, যেখান থেকে সব ধরনের বিল পেমেন্ট করা যায় এবং সব এমএফএস ও ব্যাংককে ওই সিঙ্গেল প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসতে হবে।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) প্রতিনিধি মো. সাব্বির হোসেন বলেন, ক্যাশলেস লেনদেন বাস্তবায়ন করতে হলে এ-সংক্রান্ত সব কলকে টোল ফ্রি করতে হবে এবং লেনদেনের নোটিফিকেশন বা এসএমএস খরচ কমাতে হবে।

বিকাশের মার্চেন্ট পেমেন্টের প্রধান ফয়সাল শহীদ বলেন, ক্যাশলেস লেনদেন বাস্তবায়ন করতে হলে স্মার্ট ফোনের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। পাশাপাশি ডিজিটাল পেমেন্টের জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসের ওপর করের পরিমাণ কমাতে হবে। তিনি আরও বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে শুধু ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি বাড়ালেই হবে না, সেই সঙ্গে ইন্টারনেটের কোয়ালিটিও নিশ্চিত করতে হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সাঈদ আলী বলেন,, ই-কমার্স পেমেন্টের ক্ষেত্রে বর্তমানে ক্যাশ অন ডেলিভারি প্রচলিত। ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ানোর জন্য ই-কমার্সের ক্ষেত্রে ডিজিটাল পেমেন্ট বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের পরিচালক লে. কর্নেল এসএম রেজাউর রহমান বলেন, ক্যাশলেস লেনদেনের ক্ষেত্রে সিকিউরিটি অনেক বড় একটি ইস্যু। কেননা ডিজিটাল লেনদেনে অনেক ধরনের প্রতারণা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেমন- একজন ব্যক্তি আর একজন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ফোন নম্বর ব্যবহার করছে। ফলে কোনো কারণে আর্থিক প্রতারণা হলে প্রকৃত প্রতারককে খুঁজে বের করা অনেক কঠি হয়ে যায়। বিটিআরসি এই জায়গাতে সিকিউরিটি প্রদান করছে।

সভাপতির বক্তব্যে মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সব ধরনের লেনদেনকে ক্যাশলেস করতে হবে। বর্তমানে ক্যাশলেস সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা হচ্ছে, যেগুলোর একটি অন্যটির সাথে ইন্টার-অপারেবল নয়। ফলে অর্থের অপচয় হচ্ছে। এগুলোকে সহজীকরণ করতে হবে এবং সব প্ল্যাটফর্মকে সমন্বয় করে একটি একক বিশেষায়িত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হবে। যার মাধ্যমে সব ধরনের ফী প্রদান, পরিবহন টিকিট ক্রয় এবং টোল পরিশোধ করা সম্ভব হবে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Comments are closed.

‍এই ক্যাটাগরির ‍আরো সংবাদ